নভেম্বর ২৫, ২০১৯
ব্রহ্মরাজপুরে সরকারি গাছ কর্তন: তদন্তে গেলে বন বিভাগের কর্মকর্তার উপস্থিতে হামলার অভিযোগ: আহত-৬
ডেস্ক রিপোর্ট: সরকারি রাস্তার পাশের ৪ লাখ টাকার গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনায় ভূমি অফিস ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে তদন্তে গেলে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভূমি অফিসের আউট সোর্সসিংকর্মীসহ ৬ জন গুরুত্বর আহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। ২৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সামাজিক বন বিভাগ সাতক্ষীরা জেলার ফরেস্ট অফিসার জি এম মারুফ বিল্লাহ জানান, ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের বাড়ির পূর্ব দিকে সরকারি রাস্তার পাশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
এমন সংবাদ পেয়ে আমি সহ ধুলিহর ভূমি অফিসের নায়েব মাসুমা সুলতানা, ভূমি অফিসের ন্যাশনাল সার্ভিসের আব্দুল্লাহ মামুন ঘটনা স্থলে পৌঁছাই। এ সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখা যায় স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কোরবান আলী ও তার লোকজন করাত ও কুরাল দিয়ে গাছ কেটে নিচ্ছে। গাছগুলো ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ভেঙে পড়া ছাড়াও অতিরিক্ত কিছু নতুন গাছ কাটা হয়েছে। এবং কিছু নতুন গাছ কাটার জন্য গোড়া থেকে মাটি খুড়া হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ইউপি সদস্য তার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের নিকট থেকে ২৪টি গাছ নিলামের মাধ্যমে ৭৫ হাজার টাকায় কিনেছেন বলে দাবি করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরীকে জানিয়ে গাছের মাপ জরিপ শুরু করি। এসময় হঠাৎ করে মেম্বার কোরবান আলী ও তার ছেলে বাবু ও ইয়াছিন আরাফাত ও তাদের সহযোগীরা হামলা চালায়। এসময় আউট সোর্সসিং আব্দুল্লাহ মামুন, আব্দুর রহিম বাবু, নুর ইসলাম, আজহারুল ইসলাম ও এশার আলী সহ ৬ জন আহত হয়। বন বিভাগের ফরেস্টার কর্মকর্তা জিএম মারুফ বিল্লাহ আরও জানান, আমি এ বিষয়ে লিখিত রিপোর্ট দেবো। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা জেয়ালা গ্রামের মোকলেস আলী জানান, সরকারি রাস্তার পাশে লাগানো মেহগনি, জামবুরা, মহানিম, শীল কড়াই সহ বিভিন্ন প্রজাতির ২৪টি গাছ লোক জন দিয়ে ইউপি মেম্বর কোরবান আলী ও তার ছেলে বাবু কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ভেঙে পড়া এসবের সাথে কিছু ভাল গাছও তারা সুযোগ বুঝে কেটে নেয়। এসব গাছের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। সকালে ঘটনাস্থলে সরকারি লোকজনের সাথে স্থানীয় এলাকা বাসী ও সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে তাদের উপর অতর্কিত হামলা ও কুপিয়ে জখম করে। এ ব্যাপারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাঠ ব্যবসায়ী ইউপি সদস্য কোরবান আলী জানান, আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১২টা জামবুল গাছ, মহানিম ১১টা ও একটা মেহগনি মোট ২৪টি গাছ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি। গাছগুলো কাটার সময় কিছু লোক জন এসে বাঁধা দেয়। এ সময় মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। আমার ক্রয় করা গাছ কাটছি বাঁধা দিলে মারপিট তো হবেই। ঘটনার বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি জানা মাত্রই বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গাছ কাটার বিষয়টিও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সাংবাদিক রেজাউল করিম মিঠুসহ আহত বাকিদের উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 8,480,830 total views, 2,999 views today |
|
|
|